স্যার একটা কথা কমু?
-কি বল?
-আইজ আমারে সারে ১২টায় ছুটি দেবেন?
-কেন? কি করবা?
-বাসায় গিয়া ভাত খামু, পেটে খুব ক্ষিধা লাগছে।
-কেন সকালে খেয়ে আসোনি?
-জ্বি না।
-কেন?
-তরকারি নাই। আর লবণ দিয়া ভাত খাইতে পারি না।
তাই খাইতে পারি নাই।
কথাটা শুনতেই বুকের মধ্যে কেমন যেন
লাগলো স্যারের?
-রাতে কি খেয়েছো?
-গরম ভাতে পানি দিয়া ডাল মনে করে ভাত।
-এখন কি দিয়ে খাবে?
-মায় কইছে ইস্কুল ছুটির পর গেলে কচু
রাইন্ধা রাখব। হেইডা দিয়া মজা কইরা ভাত খামু।
মায় খুব মজা কইরা কচু রানবার পারে।
কখন যে চোখটা ঝাপসা হয়ে আসল বুঝতে পারিনি।
একদিন তোমার মায়ের হাতের রান্না করা কচু
খেয়ে আসব। নিবা তোমার বাসায়?
যাইবেন স্যার সত্য?
হ্যাঁ যাব। যাও বাসায় গিয়ে পেট ভরে ভাত খাও।
মুখে পৃথিবী জয় করা হাসি নিয়ে বই হাতে নিয়ে তার
চলে যাওয়ার দিকে মন্ত্র মুগ্ধের মত তাকিয়ে
রইলাম।
তরকারির জন্য ভাত খেতে পারছে না। অথচ
আমাদের এই সমাজে কত মানুষ আছে যাদের
খাবারের মেনুতে কত আইটেম থাকে। যা তারা
খেয়ে শেষ করতে পারে
না। উচ্ছিষ্ট অংশ চলে যায় ডাস্টবিনে। এমন অনেক
বাবা মা আছেন যারা ছেলেকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে
পড়ান। গাড়ি করে নিয়ে যান। ছেলের কত আবদার!
সব পূরণ করতে ব্যস্ত। অথচ রাস্তায় পড়ে থাকা মানুষ
গুলোর দিকে ফিরেও তাকান না। তাকাবেন কেন??
তাকালেই তো ঘাড়ে এসে পড়বে। আমরা তো
নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। হাজার টাকার বডি স্প্রে
গায়ে দিয়ে ঘুরে
বেড়াই। ঈদ আসলে ব্যস্ত হয়ে পড়ি শপিং নামক
টাকা উড়ানোর খেলায়। কেউ পাখি,কেউ কিরণমালা,
কেউ শীলা কি জাওয়ানি নামক উদ্ভট সব পোশাক
কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু বুঝতে চাই না এই
বাইরের পোশাক গুলোতে আমাকে কি মানাচ্ছে?
অথচ একটা গরীব লোক এসে বলছে-দুইটা টাকা
দেন। তখন বলি-ভাংতি নাই। মাফ কর। গার্লফ্রেন্ডকে
নিয়ে চাইনিজ এ
অনেক-ই যায়। কত টাকা খরচ হয় হিসাব রাখে না অথচ
গরীব রিক্সাচালক যখন বলে-পাঁচটা টাকা বাড়াইয়া দেন।
তখন তার গায়ে হাত তুলতে দ্বিধাবোধ করে না। ঐ
গরীব লোক গুলোর অপরাধ কি?
অপরাধ একটাই যে সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে গরীবের
ঘরে জন্ম দিয়েছেন। আর আপনাকে সোনার
চামচ মুখে দিয়ে কোন ধনী বাবার ঘরে।
আসুন আমাদের যাদের সমর্থ রয়েছে আমরা এদের পাসে দারাই, আমাদের টাকা
থেকে কিছু অংশ দিয়ে ওদের জন্য কিছু করি------😒😒😒😒... আল্লাহ তায়ালা আমাদের তৌফিক দিন আমিন